চৌদ্দগ্রামে মধু আহরণে দুই চাষির ভাগ্য বদল


প্রকাশের সময় : মে ৩০, ২০২৩, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন / ৩৫২
চৌদ্দগ্রামে মধু আহরণে দুই চাষির ভাগ্য বদল

গোলাম রসুল
মধু আহরণের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের দুই মধু চাষি। সাত বছর আগে ঢাকার মুগদা পাড়া ও টাঙ্গাইল মধুপুর খামার থেকে ১৪ হাজার টাকার বিনিময়ে ৪টি করে মৌ রানী নিয়ে আসেন উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের হাজারি পাড়া গ্রামের আবদুল মমিন ও পাশ্ববর্তী নাঙ্গলকোট উপজেলার সিংহরিয়া গ্রামের মোঃ ফারুক হোসেন। প্রাথমিক পর্যায়ে তারা ৪ টি মৌ রানী দিয়ে মধু চাষ শুরু করেন। একপর্যায়ে পেশাটি লাভজনক হওয়ায় বৃহত্তর আকারে নেমে পড়েন এই দুই মধু চাষি। বর্তমানে এ দুই চাষি তাদের নিজস্ব মৌ খামার থেকে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতেছেন। মধু চাষের মাধ্যমেই আবদুল মমিন তার সন্তানদের করেছেন উচ্চ শিক্ষিত, আর ফারুক হোসেন হয়েছেন স্বাবলম্বী। নামমাত্র পুঁজি দিয়ে প্রথমে এই মধু চাষ শুরু করলেও বর্তমানে তারা দুইজনই স্বাবলম্বী। তবে সরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে তারা আরও বর্ধিত কলেবরে মধু চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করতে পারবে বলে আবদুল মমিন ও ফারুক হোসেন জানান।
জানা গেছে, আবদুল মমিন তার বাড়ির পাশে উচু ভিটায় আড়াআড়ি ভাবে বসানো বক্সগুলোতে ৩৮টি মৌ রানী রাখা আছে। এসব বক্সে এফিক্সসিরানা, এফিক্সডরাসটা, এফিক্স ক্ষুধে মাছি ও এফিক্স মেলিরিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মৌমাছি লিচু, ধনিয়া, সরিষা ও কালোজিরা গাছগাছালির ফুলে ফরাগায়ণ ঘটিয়ে মধু নিয়ে আসে। পরে বক্স থেকে মধু চাকুনীর মাধ্যমে বিশুদ্ধ করা হয়। ১৫-২০ দিনের মধ্যে বক্সগুলো থেকে প্লেট বের করে মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করা হয়। বর্ষা মৌসুমেও চাষি আব্দুল মমিন ও ফারুক হোসেনের খামারে প্রচুর পরিমান মধু পাওয়া যায়। সরাসরি খামার থেকে মধু ক্রয় করতে নিজ গ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম ও উপজেলা থেকে লোকজন ছুটে আসেন।
মৌ চাষি আবদুল মমিন বলেন, ৪ টি মৌ রানী দিয়ে মধু চাষ শুরু করেছি, বর্তমানে আমার কাছে ৩৮টি মৌ রানী রয়েছে। মধু বিক্রি করে আমার ছেলে, মেয়েদেরকে উচ্চ শিক্ষিত করেছি। সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন আর্থিক প্রণোদনা। আমি একাধিকবার উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কৃষি পুরস্কার পেয়েছি।
অপর চাষি ফারুক হোসেন বলেন, স্বল্প পুজি দিয়ে মাত্র ৪ টি মৌ রানী দিয়ে মধু চাষ শুরু করেছিলাম বর্তমানে ৪২টি মৌ রাণী রয়েছে আমার কাছে। সরকার আমাদের কোন খোঁজ খবরও রাখেনা। তাদের আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া ভবিষ্যতে এই ব্যবসাকে টিকানো অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হোসেন বলেন, মৌ পেশাটাকে বানিজ্যিক আকারে কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায় সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে চাষি আবদুল মমিনকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে। তদারকির জন্য আমি এখনই কৃষি অফিসারকে বলে দিব।

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
.#0
#20
#
20